ঝুল পড়া মিটার বক্স। ঠিক তার পাশেই তিন ফুট বাই তিন ফুট জায়গায় রান্নার সরঞ্জাম নিয়ে বসে মন দিয়ে মাখা ময়দার তাল থেকে লেচি কাটছেন এক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি। পাশে দাঁড়ানো স্কুল পড়ুয়াদের অনুরোধ চলছে, ''তাড়াতাড়ি দাও। শেষ ঘণ্টা পড়ে গেল যে!'' বয়স্ক ব্যক্তি তাদের আশ্বস্ত করছেন এই বলে, ''মাস্টারকে বলা আছে। তোরা শান্তিতে খা। আর দেব?''
ছুটির দিনগুলি বাদ দিলে রোজ সকালে, দুপুরে এই দৃশ্যই দেখা যায় মানিকতলার মুরারিপুকুরে মঙ্গল'দার কচুরির দোকানে। স্বাদের চেয়েও যে কচুরির বৈশিষ্ট্য দামে! জানা গেল, গত ২৫ বছরে কচুরির দাম বাড়াননি মঙ্গল'দা ওরফে লক্ষ্মীনারায়ণ ঘোষ!
গত ২৫ বছর ধরেই তাঁর দোকানে একেকটি কচুরির দাম ৫০ পয়সা! স্কুল পড়ুয়াদের জন্য ২৫ পয়সা!
মঙ্গল'দার দোকানে সকালে যে ভিড় দেখা যায়, তার অধিকাংশই স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা। এলাকায় বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে। রোহন দাস নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ''স্কুলের টিফিন সেন্টার ওটা। কীভাবে ওই টাকায় কচুরি বেচে সংসার চালান, তা মঙ্গল'দাই জানেন!''
মানিকতলার মুচিবাজার এলাকায় বাড়ি মঙ্গল'দার। দুই সন্তান এবং স্ত্রীয়ের সংসারে তিনিই একমাত্র রোজগেরে। ২৫ বছর আগে ওই মিটার বক্সের ঘরে বন্ধুদের সাহায্যে কচুরির দোকান শুরু করেছিলেন তিনি। জানালেন, এতদিনে মাত্র দু'বার দাম বেড়েছে তাঁর কচুরির। ৫০ পয়সা হওয়ার পরে আর বাড়াননি। তাঁর কথায়, ''এটাই তো আমার বিশেষত্ব। সব কিছুর দাম বাড়ে, আমার কচুরির বাড়ে না। আমি এতেই খুশি।'' একটু থেমে বলেন, ''এটা গরিবের পাড়া, দাম বাড়ালে খাবে কে?''
USDT
"২৫ বছর ধরে এই কচুরির দাম ৫০ পয়সা, পাওয়া যাচ্ছে এ শহরেই" - ২৫ বছর ধরে এই কচুরির দাম ৫০ পয়সা, পাওয়া যাচ্ছে এ শহরেই
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment